মুম্বাই: পেশায় তিনি মনোবিদ। আর এই পেশার আড়ালেই লুকিয়ে ছিল তার কালো চেহারা। প্রত্যান্ত গ্রামীণ এলাকায় বিশেষ শিবিরের আয়োজন করতেন। সেই শিবিরে কাউন্সেলিং করানোর আড়ালে অল্পবয়সী মেয়েদের যৌন নির্যাতন করতেন ৪৭ বছর বয়সী মনোবিদ রাজেশ ধোকে। অভিযোগ, একাধিক মেয়েকে ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেলও করেছেন তিনি। গত ১৫ বছর ধরে বিশেষ শিবিরের আড়ালেই চলত তার কুৎসিত কর্মকাণ্ড। এবার মনোবিদের কু-কর্মে লাগাম পরাল পুলিশ। ৫০ জনের বেশি মেয়েকে ধর্ষণ ও ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগে নাগপুরের মনোবিদকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ইতিমধ্যে রাজেশের ধোকের বিরুদ্ধে পকসো আইন এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ভান্ডারা ও গোন্ডিয়ার মতো প্রত্যান্ত গ্রামীণ এলাকায় মেয়েদের পেশাগত উন্নয়নের জন্য শিবিরের আয়োজন করতেন। সেই শিবিরের আড়ালেই মেয়েদের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করতেন অভিযুক্ত।
সূত্রের খবর, শিবিরের আড়ালেই মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে মেয়েদের অশ্লীল ছবি ধারণ করা হত। পরে সেই অশ্লীল ছবিগুলি দেখিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেল ও ধর্ষণ করতেন রাজেশ বলে অভিযোগ। এমনকি মেয়েদের হুমকিও দিতেন, যাতে পুলিশের কানে এই খবর না যায়। অনেক মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও তাদের অশ্লীল ছবি ভাইরাল করে দেওয়া হুমকি দিয়ে চলত তাদের ধর্ষণ করা হত। পুলিশ সূত্রে খবর, নিজের এলাকাতেও বেশ কয়েকজন মহিলাকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগও রয়েছে রাজেশের বিরুদ্ধে। পুলিশ হাতে একটি সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছে। সেই ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রাজেশ মহিলাদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ ও শ্লীলতাহানির মত ঘটনায় জড়িত। তার এই কর্মের জন্য বেশ কয়েকবার নাগপুরের মনোবিদকে গণধোলায় দেওয়া হয়। তারপরও তার কাণ্ডকারখানায় কোনো পরিবর্তন হয়নি।
যদিও এতদিন এই কাণ্ডকারখানা প্রকাশ্যে আসেনি। অভিযুক্তের এক প্রাক্তন ছাত্র তার মুখোশ খুলে দিয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই প্রাক্তন ছাত্রকে প্রতিনিয়ত হুমকি ও গালিগালাজ করতেন রাজেশ। তার এই আচরণে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে পুলিশের দারস্থ হয় ওই ছাত্র। রাজেশের কু-কর্মের ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে তার বিরুদ্ধে হুডকেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এরপরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। তড়িঘড়ি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে নেমে নাগপুরের মনোবিদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।