কুয়াশাকে ঢাল বানিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, পুলিশে জালে বাংলাদেশী

শেয়ার করুন

নিজস্ব সংবাদদাতা, রানিনগর: দু’পারে দু’দেশ। মাঝে নেই কাঁটাতার। রানিনগরের ফেন্সিংহীন এমন চর সীমান্তই যেন হয়ে উঠেছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের করিডর। শীতের ঘন কুয়াশাকে ঢাল করে রাতের অন্ধকারে সীমান্তরক্ষা বাহিনীর নজর এড়িয়ে প্রায়শই এদেশে ঢুকছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা। মাঝেমধ্যে তারা ধরাও পড়েছে। তবুও কিছুতেই যেন রাশ টানা যাচ্ছে না অনুপ্রবেশে। টাকার বিনিময়ে ওপারের লোকেদের এদেশে ঢুকতে সাহায্য করছে খোদ ভারতীয় দালালরাই। ২৯ নভেম্বর রাতেও ঠিক এই কায়দাতেই ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল এক বাংলাদেশি। দুই ভারতীয় দালালের সহায়তায় সীমানা পার করে মূল ভূখণ্ডে ঢুকেও গিয়েছিল সে। যদিও শেষপর্যন্ত গোপনসূত্রে খবর পেয়ে রানিনগরের কার্গিল ঘাটে অভিযান চালিয়ে ওই বাংলাদেশিসহ দুই ভারতীয় দালালকে গ্রেপ্তার করেছে রানিনগর থানার পুলিশ। ধৃত ওই বাংলদেশির নাম সাইদুল শেখ। তার বাড়ি বাংলাদেশের পাবনা জেলায়। বাকি দুই দালালের নাম ফিজুল শেখ ও আমিনুল শেখ। তাদের দু’জনের মধ্যে একজনের বাড়ি রানিনগর ও অপরজনের বাড়ি মালদার বৈষ্ণবনগরে। পরের দিন ধৃতদের লালবাগ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সোর্স মারফৎ তাঁদের কাছে খবর আসে রানিনগরের কার্গিল ঘাট এলাকা দিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। খবর পাওয়া মাত্রই ওই এলাকায় গোপনে নজরদারি শুরু করে পুলিশের একটি টিম। ২৯ নভেম্বর শেষ রাত্রীতে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে মাঠের মধ্যে থেকে তিনজনকে আসতে দেখেন তাঁরা। এরপরই তাঁদের দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয়। সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়। সেই সময় বাকি দু’জন পরিচয়পত্র দেখাতে পারলেও অন্যজন পারেনি। এরপরই তাদের ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ধৃতরা অনুপ্রবেশের বিষয়টি স্বীকার করে নেই। এরপরে তাদের পাকড়াও করে থানায় আনা হয়। শেষে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ধৃতদের গ্রেপ্তার করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্তকারী এক আধিকারিক বলেন, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে যা জানা গিয়েছে তাতে ওই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে টাকার বিনিময়ে এদেশে প্রবেশ ও অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতার বরাত নিয়েছিল দুই দালাল। তাদের মধ্যে রানিনগরের দালালের কাজ ছিল তাকে অনুপ্রবেশে সহায়তা করা। এরপরে তাকে কেরালায় কাজে পাঠানোর ব্যবস্থার দায়িত্ব ছিল মালদার দালালের ওপরে।

Read More: তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার ইসলামপুরে, দেহাংশ ছিড়ে খেল শিয়াল

তবে শুধু এই প্রথম নয়, বেশিরভাগ সময়য়েই ভারতীয় দালালের সহায়তায় বৈধ কাগজপত্র ছাড়া এদেশে প্রবেশ করেই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বেশিরভাগের গন্তব্যই দক্ষিণ ভারত। সেখানে তারা বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে মিশে শ্রমিকের কাজ করছেন। মাস খানেক পুনরায় বাড়ি ফেরার পথে রানিতলা থানা পুলিশের হাতে পাকড়াও হয়েছিল ৪০ জন বাংলাদেশি। তবে মাঝেমধ্যেই অনুপ্রবেশ ঘটায় সীমান্তে বিএসএফের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *