দেশজুড়ে ২০০-এর বেশি নতুন কারাগার নির্মাণ করেছে চীন

শেয়ার করুন

বেজিং: দেশজুড়ে ২০০-এর বেশি নতুন কারাগার নির্মাণ করেছে চীন সরকার। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নির্দেশেই এই কারাগারগুলো তৈরি করা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আবার পুরনো কারাগার সংস্কার করে খোলা হয়েছে নতুন বিভাগ। সেখানে নতুন নিয়ম চালু করছে জিনপিং প্রশাসন। এই কারাগারগুলো ‘লিউঝি’ কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত।

কী উদ্দেশ্যে কারাগার নির্মাণ?

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, দেশজুড়ে দুর্নীতি দমন অভিযান শুরু করেছেন জিনপিং সরকার। তার জন্যই নতুন কারাগারগুলো তৈরি করা হয়েছে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের আটক করে রাখা হবে এসব কারাগারে। চীন সরকারের নিদান অনুযায়ী, অন্তত ছ’মাস সেখানে তাদের বন্দি করে রাখা যাবে বিনা বাধায়। এই সময়ের মধ্যে তারা কোনও আইনি সাহায্য পাবেন না। এমনকি দেখা করতে পারবেন না পরিবারের সঙ্গেও। স্রেফ সন্দেহের বশেই আটক করা যাবে অভিযুক্তদের।

কারাগারগুলির বিশেষত্ব কী রয়েছে?

এই ‘লিউঝি সেন্টার’গুলোর নানা বিশেষত্ব রয়েছে। বন্দি অবস্থায় কেউ যাতে নিজেকে আঘাত করতে না পারেন, তার জন্য দেয়ালে লাগানো আছে নরম গদি। ২৪ ঘণ্টা প্রহরা এবং নজরদারি ক্যামেরাও রয়েছে সেখানে। ছ’মাস পর ‘লিউঝি সেন্টার’ থেকে বেরিয়ে এক জন দাবি করেছিলেন, তাকে প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা সোজা হয়ে বসিয়ে রাখা হত, ঘুমোনোর অবকাশও দেওয়া হত না। এমনই নানা ধরনের অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে জিনপিংয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। ২০১৭ এবং নভেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে, ২১৮টিরও বেশি লিউঝি কেন্দ্র তৈরি বা সম্প্রসারিত করা হয়েছিল, যার নির্মাণ ত্বরান্বিত হয়েছিল মহামারী পরবর্তী সময়ে।

কতগুলি কারাগার নির্মাণ হয়েছে?

২০১৭ থেকে নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ২১৮টিরও বেশি লিউঝি কেন্দ্র নির্মাণ বা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। মহামারির পর এই নির্মাণ কাজ আরও দ্রুত হয়েছে। নতুন এ কারাগারগুলো নিয়েও নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এটি ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের সুযোগ তৈরি করছে।

Read More: কেমন ছিল সিরিয়ার ‘মানব কসাইখানা’? ভয়াবহ নৃশংসতা শোনালেন জেলমুক্তরা

২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রেসিডেন্ট শি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, কমিউনিস্ট পার্টি এবং সামরিক বাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছেন। এখন তার তৃতীয় মেয়াদে দুর্নীতি বিরোধী ক্রুসেড তার নেতৃত্বের একটি বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে, দলীয় লাইনের বাইরে পাবলিক প্রতিষ্ঠানেও তা প্রসারিত হয়েছে। চীনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এতদিন ‘শুয়াংগুই সিস্টেম’ চালু ছিল। দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের সেখানে বন্দি করা হতো। অত্যাচার এবং হেনস্থার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচিত হয়ে আসছে সেই ব্যবস্থা। ‘লিউঝি সেন্টার’-এর মাধ্যমে তাকেই আবার নতুন রূপে ফিরিয়েছেন জিনপিং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *