নিজস্ব সংবাদদাতা, ডোমকল: জাঁকিয়ে শীত, তার দোসর উত্তরে হাওয়া। বিঘের পর বিঘে ঢেকে গিয়েছে সর্ষে ফুলের হলুদ গালিচায়। মধু সংগ্রহের মোক্ষম সময় এটাই। তাই কাঠের বাক্সে মৌমাছি নিয়ে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি থেকে ডোমকল মহকুমার সীমান্তে হাজির মউলেরা। বিস্তীর্ণ সর্ষে খেতের পাশে ঘাঁটি গেড়ে চলছে মধু সংগ্রহ।
শীত পড়লেই মধুর চাহিদা বাড়ে। শীতের রাতে কনকনে ঠান্ডা ও দিনে মিঠেকড়া রোদে মধু উৎপাদন বেশি হয়। তাই বছরের এই সময়ে সর্ষে ফুলের মধু সংগ্রহে জমির পাশে মৌমাছিদের বাক্সবন্দি করে হাজির হয় মউলেরা। বাক্সগুলিকে সর্ষে খেতের পাশে সারিবদ্ধ ভাবে রাখা হয়। সকাল হলেই বাক্স থেকে হাজার হাজার মৌমাছি বের হয়ে মধু সংগ্রহ করতে ঘুরে বেড়ায় সর্ষের ফুলে ফুলে। এদিকে কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় মহকুমাজুড়ে এবারে আরও ব্যাপকভাবে সর্ষে চাষ হয়েছে। ফলে পোয়াবারো মউলেদের। দিনব্যাপী মৌমাছিরা যেমন মধু সংগ্রহে ব্যস্ত থাকছে। তেমন তাঁদের সৌজন্যে পরাগ সংযোগ ঘটছে সর্ষে ফুলে। ফলে এই মরশুমে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করে যেমন লাভবান হচ্ছেন মউলরা, তেমনি পরাগা সংযোগে সর্ষের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনায় চাষিরাও বাড়তি আয়ের আশা করছেন।
শীতে সর্ষেফুলের মধু সংগ্রহ করতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে কয়েকশো মৌমাছি ভর্তি বাক্স নিয়ে জলঙ্গিতে এসেছেন শরিফুল শেখ। তিনি বলেন, আমরা খাঁটি মধু সংগ্রহ করি। বছরের এই সময়টার জন্য আমাদের মৌমাছিগুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়। আমরা প্রতি বছর এই সময়ে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় সর্ষে খেত থেকে খাঁটি মধু সংগ্রহ করে থাকি। এই মধুর চাহিদা ভালো। আমরা এবছর ১৪৬টি মৌমাছি ভর্তি বাক্স নিয়ে এসেছি। প্রত্যেকদিন ভালো মধু সংগ্রহ হচ্ছে। জেলার কৃষিদপ্তরের এক কর্তা বলেন, সর্ষে খেতের পাশে মৌ চাষের বাক্স স্থাপন করলে, সর্যের ফলন প্রায় ২০ শতাংশ বাড়ে। মৌমাছিরা ফুলে ফুলে মধু সংগ্রহের সময় পরাগ সংযোগ ঘটায়। এতে দু’পক্ষেরই লাভ। সঙ্গে জীব বৈচিত্র্য বজায় থাকে।