লড়াইয়ের পথেই কৃষকরা

শেয়ার করুন

পাঁচ দফা দাবিতে ফের পথে নামছেন কৃষকরা। আবারও সাধারণতন্ত্র দিবসে রাজধানী দিল্লির জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা। আগামী একমাসে দেশজুড়েই একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কৃষকরা। দেশের অন্নদাতাদের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী ১৩ জানুয়ারি দেশের গ্রামে গ্রামে নতুন কৃষি নীতির খসড়া পোড়াবেন কৃষকরা। দেশজুড়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে। ২৬ জানুয়ারি অর্থাৎ সাধারণতন্ত্র দিবসে দেশজুড়ে ট্রাক্টর মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কৃষকদের সংগঠন সংযুক্ত কিষান মোর্চা (অরাজনৈতিক)। ওইদিন ফের পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা রাজধানী দিল্লিতে প্রবেশ করতে পারেন। দীর্ঘদিন ধরে পাঞ্জাবে অনশনে কৃষক নেতা দালেওয়াল। কৃষকদের তরফে যে ৫ দফা দাবি তোলা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, পুরনো ভূমি অধিগ্রহণ আইনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ১০ শতাংশ প্লট এবং ৬৪.৭ শতাংশ বর্ধিত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ১ জানুয়ারি, ২০১৪ সালের পর অধিগ্রহণ করা জমির জন্য বাজারমূল্যের চার গুণ ক্ষতিপূরণ এবং ২০ শতাংশ প্লট দিতে হবে। এর পাশাপাশি সকল ভূমিহীন ও ভূমিহীন কৃষকের সন্তানদেরও কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের সুবিধা দিতে হবে। এবং সর্বোপরি আইন এনে এমএসপির গ্যারান্টি নিশ্চিত করতে হবে। সেই দাবি আদায়েই অনশনে ওই কৃষক নেতা। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার খানাউরি সীমানায় অবস্থানে রয়েছেন কৃষকরা। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা-সহ একাধিক দাবি রয়েছে তাঁদের।

কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে যদি এ পর্যন্ত কোনও গণআন্দোলন বিব্রত করে থাকে, সেটা কৃষক বিক্ষোভ। ২০২১ সালে কৃষকদের আন্দোলনের জেরে কৃষি আইন প্রত্যাহারও করতে হয় কেন্দ্রকে। কিন্তু তারপরও সমস্যা মেটানো যায়নি। এখনও পাঞ্জাব-হরিয়ানার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কেন্দ্রবিরোধী বিক্ষোভে কৃষকরা। কৃষক নেতা জগজিৎ সিং দালেওয়াল এখনও অনশনে। অবস্থানের প্রথম দিন থেকেই কৃষকদের দাবিগুলি অত্যন্ত স্পষ্ট। তা সত্ত্বেও তাদের আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। একটা ধারণা তৈরি করা হচ্ছে, কৃষকরা জেদি। কিন্তু কেন্দ্রই নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে কৃষকদের কোনও দাবিতেই আমল দিচ্ছে না। কৃষকরা বলেছে, তারা গান্ধীবাদী নীতিতে চলব। এ বার সরকারের উপর নির্ভর করছে যে তারা অনশনরত জগজিৎ সিং দালেওয়ালের উপর জোরজুলুম করবে, না তাঁর দাবিগুলি শুনে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে। এদিকে সুপ্রিম কোর্টও কৃষকদের বিক্ষোভ নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধেছে। শীর্ষ আদালত একপ্রকার বলে দিয়েছে, কৃষক আন্দোলন দমন করার কোনও সদিচ্ছাই সরকারের নেই। এই পরিস্থিতিতে সরকারের ঘুম ভাঙাতে ফের পথে নামছেন কৃষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *