নিজস্ব সংবাদদাতা, ডোমকল: রানিনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে আর থাকলো না বিরোধী দলনেতা। এক মামলার পরিপ্রেক্ষিততে পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতার পদে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের বিচারপতি রবি কিষান কাপুর। ওই খবর চাউর হতেই রানিনগর এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। জানা গিয়েছে, রানিনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট সদস্য সংখ্যা ২৭ জন। তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা ১৩ জন, কংগ্রেসের ৯ জন বামফ্রন্টের ৫ জন। অভিযোগ ছিল, নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিরোধী দলনেতার পদে বসানো হয় শাসকদল তৃনমূলের সদস্য মিজান হাসানকে। মামলাকারীর আইনজীবি রবিউল ইসলাম সংবাদ হেডলাইনকে বলেন, “বিডিও আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে, বেআইনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মহামান্য হাইকোর্ট বিডিও এর সিদ্ধান্তকে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। মামলা নিস্পত্তির জন্য বিডিও এর কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন।” আইনজীবির কথায়, “পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী দ্বিতীয় বৃহত্তম দল থেকে বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হওয়ার কথা। কিন্তু বিডিও সম্পূর্ণ বেআইনী ভাবে বৃহত্তম নির্বাচিত সদস্য যুক্ত তৃনমূল দলের সদস্যকে বিরোধী দলনেতার মর্যাদা দিয়েছিলেন।”
বিগত পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জিততে পারেনি তৃণমূল। ফলে রানিনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতির দখল নেয় বাম-কংগ্রেস জোট। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন জোটের মুখ কুদ্দুস আলি। তিনিই বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের মিজান হাসানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। যদিও কুদ্দুস আলি রং বদলে বর্তমানে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। এদিন সভাপতির করা মামলার শুনানি ছিল আদালতে। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট এক নির্দেশ দিয়ে বিরোধী দলনেতার পদে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এরপরই রানিনগরের রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। এবিষয়ে তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা মিজান হাসান বলেছেন, “উচ্চ আদালতে বিষয়টি বিচারাধীন, তাই ওই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করবো না।”
অবশ্য পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল সদস্য যুক্তি দিয়েছেন, “সাধারণত নিয়ম সভাপতি গঠনে যারা ভোটদানে অংশ গ্রহন করে থাকে তাদের মধ্য থেকে বিরোধী দলনেতা হয়না। তৃণমূলের কেউ ভোটদানে অংশ নিয়েছিল না। তাই তৃণমূলের মধ্য থেকে বিরোধী দলনেতা নির্বাচন করা হয়েছিল।” এদিকে রানিনগর ২ ব্লকের বিডিও কৃষ্ণনির্মাল্য মাঝি জানান, “বিরোধী দলনেতা নিয়ে আইনগত প্রেক্ষাপটে একটা কাগজ এসেছে, তবে ওই ব্যাপারে অগামী ১৩ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি আছে।” পাল্টা আইনজীবি জানিয়েছেন, “আপাতত স্থগিতাদেশ হয়েছে। আগামী দিনে তা বাতিল হয়ে যাবে।”