নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: দিন যতই গড়াচ্ছে, ওয়াকফ নিয়ে আন্দোলনের ঝাঁঝ ততই বাড়ছে বাংলায়। শুধু রাস্তাতেই লড়াই নয়, এবার আইনি পথে ওয়াকফ নিয়ে লড়াই করতে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হল মুর্শিদাবাদের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। নয়া আইনকে অসাংবিধানিক দাবি করে দেশের শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছে মুর্শিদাবাদের রানিনগের বেগম হাজেরা এডুকেশনাল চ্যারিটেবল ট্রাস্ট। বৃহস্পতিবার সংশোধিত ওয়াকফ আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
সুদূর রানিনগরের শেখপাড়া থেকে দিল্লি গিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি দায়ের করেছে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির ফকির। এদিন ‘সংবাদ হেডলাইন’কে তিনি জানান, “কঠিন পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে দেশের সংখ্যালঘু মুসলিমরা। নয়া ওয়াকফ আইন মুসলিমদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেছে। শুধু রাস্তাতেই প্রতিবাদ-আন্দোলন জারি রাখলেই ওয়াকফ আইনকে রোখা যাবে না। আইনি পথেও লড়াই জারি রাখতে হবে। যে কারণেই আমি সর্বোচ্চ আদালতের দারস্থ হয়েছি।”
ফকির বলেন, কৃষক আন্দোলনের জেরে চাপের মুখে পড়ে কৃষি আইন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল মোদি সরকার। আমরাদেরও সংঘবদ্ধ হয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তবে বিক্ষোভ-আন্দোলনে কোনও ভাবেই যাতে অশান্তি-হিংসা না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। সাংবিধানিক পথে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নিজেদের অধিকারের দাবি প্রতিবাদ করলে মুসলিমদের সন্ত্রাসী-জঙ্গি বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে আরএসএস-বিজেপি। এসবের থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আরও বলেন, “এই আইন শুধু মুসলিমদের ক্ষতিগ্রস্থ করবে না, সমগ্র দেশের ক্ষতি করবে। যে কারণেই ওয়াকফ আন্দোলনে অমুসলিমদেরও সামিল করতে হবে।”
এদিকে মামলাকারীর আইনজীবী রবিউল ইসলাম জানান, ওয়াকফ আইন নিয়ে গোটা দেশ উত্তাল। নয়া আইন মুসলিমদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে দেশজুড়ে বহু মানুষ পথে নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বেগম হাজেরা এডুকেশনাল চ্যারিটেবল ট্রাস্ট আদালতে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অসাংবিধানিক আইন বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার মামলা ফাইল করা হয়েছে। এই আইন বাতিলের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
ওয়াকফ কী?
ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা যে সম্পত্তি ধর্মপ্রচার এবং সমাজের উন্নতিকল্পে দান করেন, সেটাকে ওয়াকফ বলে। এই ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করা যায় না বা ব্যবসায়ীক স্বার্থে ব্যবহার করা যায় না। ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, ওয়াকফ আসলে ঈশ্বরের সম্পত্তি।