মুম্বাই: মহারাষ্ট্রে এ বার ‘লাভ জিহাদ’ আইন? রাজ্যের বিজেপি সরকার সেই দিকেই পা বাড়াচ্ছে। ‘লভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে আইন কী কী করণীয়, তার খসড়া তৈরির জন্য শুক্রবার সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ফড়নবীশ সরকার। ওই কমিটির মাথায় বসানো হয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে। ‘লাভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে আইনের খসড়া তৈরি করবে সাত সদস্যের এই কমিটি। সরকারি একটি রেজ়োলিউশনে (জিআর) জানানো হয়েছে, কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন মহারাষ্ট্র পুলিশের ডিজি সঞ্জয় ভার্মা। বাকি ছয় সদস্যের মধ্যে রয়েছেন নারী এবং শিশুকল্যাণ দফতর, সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর, আইন এবং বিচার দফতর, স্বরাষ্ট্র দফতর, বিশেষ সহযোগিতা দফতর এবং সামাজিক ন্যায়বিচার দফতরের প্রতিনিধিরা।
সরকারি রেজ়োলিউশনে জোর করে ধর্মান্তরণ এবং প্রতারণার মাধ্যমে ধর্ম পরিবর্তন করানোর কথা রয়েছে। ‘লভ জিহাদ’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করা হলেও এর ব্যাখ্যার উল্লেখ নেই। রাজ্যে এই ধরনের ঘটনাগুলির বর্তমান পরিসংখ্যান কী এবং এগুলি রুখতে কী কী করা যায় তার পরামর্শ চাওয়া হয়েছে ওই কমিটির কাছে। প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার আগে থেকে লাভ জিহাদ নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও তিনি বলেছিলেন, প্রেমের নামে জোর করে ধর্মান্তরিত বন্ধ করতে কড়া আইনও চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এবার যেন সেই কথাই রাখলেন ফড়ণবীস।
সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এনসিপি (শরদ পাওয়ার) নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে। তিনি বলেছেন, “বিয়ে ও ভালোবাসা প্রত্যেকের ব্যক্তিগত পছন্দ।” তাঁর কটাক্ষ, “আমেরিকা নতুন শুল্ক আরোপ করেছে, যা দেশে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। সরকারের উচিত এসব বিষয়ে নজর দেওয়া। আমি সরকারকে অনুরোধ করছি বাস্তব বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে।” বিজেপির সমালোচনা করে সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক আবু আজমি বলেন, “সরকার কেবল মুসলিমদের হয়রানি ও সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানো কাজেই মনোনিবেশ করেছে। লাভ জিহাদ বলে কিছু নেই।”
উল্লেখ্য, তবে এই লাভ জিহাদ বিরোধী আইন তৈরিতে মহারাষ্ট্র কিন্তু প্রথম নয়। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশে ও অসমের বিধানসভায় পেশ হয়েছে এই লাভ জিহাদ বিরোধী বিল। উত্তরপ্রদেশে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসাবে বিলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের উল্লেখ রয়েছে। শাস্তির বিষয়ে যোগীর নীতিতেই হেঁটেছে বিশ্বশর্মাও। তবে শাস্তির বিষয়ে মহারাষ্ট্র কোন পথে এগোবে, সেই উত্তর এখনও সময়সাপেক্ষ।