ছেলে জঙ্গি নয়: দ্বৈত কণ্ঠে বললেন দুই মা

শেয়ার করুন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: দেশজুড়ে জঙ্গি ও বাংলাদেশি সন্দেহে বাঙ্গালী মুসলমানদের হেনস্থা ও গ্রেফতারির বিরুদ্ধে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয় মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। সোমবার (২০ জানুয়ারি) কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের অবস্থান বিক্ষোভে হাজির হয়েছিল মুর্শিদাবাদে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া আব্বাস ও মিনারুলের পরিবার। সেখানেই আব্বাসের মা বলেন, ছেলে এলাকাতেই কাজ করত, কোনওদিন ভিন রাজ্যে যায়নি। নানান তকমা দিয়ে তাঁকে জঙ্গি বানিয়ে দেওয়া হল। আমার ছেলে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়। প্রত্যান্ত গ্রামের বৃদ্ধা শহরে এসে ইনসাফের দাবি জানিয়ে উম্মে হাবিবা বললেন, “আমার ছেলে জঙ্গি নয়, তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন।” গত ১৮ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে জঙ্গি সন্দেহে মোঃ আব্বাস আলী ও মিনারুল সেখকে গ্রেফতার করে অসম এসটিএফ। তারপর থেকে আব্বাস-মিনারুলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁর পরিবার। কোথায় রয়েছে তারা! সেটিও অজানা অসহায় পরিবারগুলির। এদিন অবস্থান বিক্ষোভে মিনারুল সেখের মা আসমা বিবি চোখে একরাশ জল নিয়ে বললেন, একমাস হতে চলল ছেলে বাড়িতে নেই। সে কোথায় আছে, কীভাবে আছে কিছুই জানতে পারছি না। বাড়িতে অসুস্থ স্বামী, ছেলের চিন্তায় ওর বাবা আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তাঁর প্রশ্ন, “মিনারুল নেই কীভাবে সংসার চালাব।” এদিকে সাধারণ মুসলিম জন সাধারণকে বাংলাদেশী জঙ্গি তকমা দেওয়ার পাশাপাশি জঙ্গি সন্দেহে জেলার সাধারণ মানুষের ওপর এনআইএ এবং এসটিএফ-এর হেনস্থা বন্ধের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি। এপিডিআর-এর মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি হামিদ সরকার বলেছেন, মুর্শিদাবাদ ঢাল বানিয়ে বড় ষড়যন্ত্রের ছক কষা হচ্ছে। তাঁর জলজ্যান্ত উদাহরণ বেলডাঙ্গার হিংসা। নানাভাবে জেলার সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয়-ভীতি ঢুকিয়ে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা চলছে। জঙ্গি তকমা দিয়ে যে দু’জনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তারা সন্ত্রাসবাদী নয়। মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে এক শ্রেণীর সংবাদমাধ্যম। অন্যদিকে, সোমবার (২০ জানুয়ারি) পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন আব্বাস ও মিনারুলের পরিবার। কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১৮ ডিসেম্বর রাতের গোটা ঘটনা তুলে ধরেন অসহায় পরিবারের সদস্যরা। একইসঙ্গে বেশকিছু দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।

(নোট: খবরটি ২০ জানুয়ারির, ২৬ জানুয়ারি প্রিন্ট সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে। ৩১ জানুয়ারি ডিজিটাল সংস্করণে প্রকাশ করা হল।)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *