সংবাদ হেডলাইন ডেস্ক: আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আইসিসি ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গাজার গণহত্যা নিয়ে অযৌক্তিক তদন্ত করছে বলে অভিযোগ তুলেছে ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্টের সই করা আদেশে বলা হয়, আদালত তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। তারা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এই পরোয়ানাটি ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধের জন্য জারি করা হয়েছে।
আদেশ অনুযায়ী, আইসিসি ‘অবৈধ পদক্ষেপ’ নিয়েছে, বিশেষ করে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের যুদ্ধাপরাধী বলে এবং গাজায় ইসরাইলের আক্রমণ নিয়ে তদন্ত করে। ট্রাম্পের আদেশে আইসিসি-এর কর্মকর্তাদের, কর্মচারীদের এবং তাদের পরিবারদের বিরুদ্ধে সম্পত্তি জমা এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কারণ তারা এই তদন্তে সহায়তা করেছে।
আইসিসি-র তীব্র প্রতিবাদ
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। আদালতের স্বাধীনতা রক্ষায় তার সদস্য দেশগুলিকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আইসিসি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাগুলিকে আদালতের নিরপেক্ষতা এবং বিচারের কাজকে ক্ষুন্ন করার চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছে। আইসিসি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা আমাদের কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকব এবং পৃথিবীজুড়ে নিরপরাধ মানুষের জন্য ন্যায়বিচার দিতে থাকব।’ আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা আমাদের ১২৫টি সদস্য রাষ্ট্র, নাগরিক সমাজ এবং বিশ্বের সব দেশকে ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকার রক্ষায় এক হয়ে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই।’
আইসিসি-র গ্রেফতারি পরোয়ানা
গত নভেম্বরে, আইসিসি নেতানিয়াহু এবং তাঁর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। আইসিসি-র ইতিহাসে সেই প্রথমবার পশ্চিমা দেশগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর আগে, ট্রাম্প ২০২০ সালে আইসিসি-এর প্রসিকিউটর ফাতৌ বেনসুডা এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। সেই সময় বেনসুডা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করেছিলেন।
তবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২১ সালে সেই নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত রায় দেয় যে, ইসরাইলকে গাজায় গণহত্যা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে হবে, কিন্তু ইসরাইল সেই রায় মানেনি। এখন কিউবা দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে-তে মামলা করার ঘোষণা দিয়েছে।