ইসরাইলি ‘জেনোসাইড’ নিয়ে নীরব বিশ্ব মোড়লরা

শেয়ার করুন

গাজা: পবিত্র রমজানে গাজায় শোনা যাচ্ছে স্বজনহারাদের আহাজারি। মিনার-ভাঙা মসজিদ থেকে কান্নাভেজা গলায় ভেসে আসছে মুয়াজ্জিনের আযান। ভোর রাতে সেহরির সময় থেকেই শুরু হচ্ছে প্রাণঘাতী হামলা, যার সামনে অসহায়ের মতো প্রাণ দিচ্ছেন মজলুম গাজাবাসী। যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে শুধু গাজা নয়, দক্ষিণ লেবানন, ইয়েমেনেও চলছে ইসরাইল ও মার্কিন বাহিনীর হামলা। আনসারুল্লাহ বাহিনী তেল আবিবের বেন গুরিয়ন এয়ারপোর্টে মিসাইল ছুড়লেও তা খুব একটা ক্ষতি করতে পারেনি ইসরাইলের। তবে কয়েক ঘণ্টা বন্ধ ছিল প্লেন চলাচল। তেল আবিবের মানুষ হুতি-আনসারুল্লাহকে কিছুটা হলেও ভয় পাচ্ছে এখন। তাই সেখানে যুদ্ধবিরোধী ও নেতানিয়াহু বিরোধী সমাবেশ হচ্ছে প্রতিদিনই। তবে এসবে কর্ণপাত করছে না তেল আবিবের কসাই নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে যায়নবাদী হানাদাররা ৫০ হাজার ফিলিস্তিনিকে শহিদ করেছে। আহত ও পঙ্গুর সংখ্যা এক লক্ষের বেশি। লাখ লাখ মানুষ ঘরছাড়া। এরপরও ইসরাইলের এই ‘জেনোসাইড’ নিয়ে নীরব বিশ্বের মোড়লরা। তারা একে গণহত্যা বলতেও রাজি নন। অথচ ১ বছর ৫ মাসে সেখানে হানাদার বাহিনীর হাতে নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৫০ হাজার। যার বেশিরভাই নারী ও শিশু। কেবল শিশুই মারা গেছে ১৭ হাজার। এত বেশি শিশু নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে একটি পুরো প্রজন্মই ধুলায় মিশে গেছে। যেসব শিশু স্বপ্ন দেখত, যাদের উচ্চাশা ছিল, যারা জীবনে বড় কিছু করতে চাইত, তারা আজ হারিয়ে গেছে।

নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৫০ হাজারের চেয়ে আরও বেশি। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ শুধু নথিবদ্ধ হতাহতের হিসাবে রেখেছে। এমন অসংখ্য নিহত ব্যক্তিকে কবর দেওয়া হয়েছে, যাদের নথিবদ্ধ করা হয়নি। তা ছাড়া অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। বহু গাজাবাসী ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে হামলা শুরু করার পর গত চারদিনেই সেখানে ১২০০-এর বেশি গাজাবাসী ইসরাইলি নৃশংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে অন্তত ৩৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যার এক দিন পর গাজার খান ইউনিসে হামলা চালিয়ে হামাসের এক নেতাকে হত্যা করেছে ইসরাইল। নিহত ওই নেতার নাম সালাহ আল-বারদাউইল। তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর একজন সদস্য ছিলেন। গাজার দক্ষিণাঞ্চলের শহর খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় হামলায় তিনি স্ত্রীসহ নিহত হন।

গাজায় কয়েক দিন ধরে তুমুল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। ওই রকেট হামলার পর ইসরাইলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননেও আক্রমণ চালাচ্ছে। ইসরাইলের হামলায় দক্ষিণ লেবাননে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন এবং চার মাস আগে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েইর যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, সেটাও ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে। এদিকে আমেরিকা ইয়েমেনে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে। ইয়েমেনের তারা ইয়েমেনের হোদেইদা বিমানবন্দরে তিনটি এবং লোহিত সাগরের আস-সালিফ বন্দরে আরেকটি আক্রমণ চালিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *