কলকাতা: উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরে পুলিশের ‘এনকাউন্টারে’ মৃত্যু হয় সাজ্জাক আলমের। সোমবার সেই ‘এনকাউন্টার’ নিয়ে মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। এই ঘটনায় আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। তারপরই মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
খুনের মামলায় বিচারাধীন ছিলেন সাজ্জাক আলম। ১৫ জানুয়ারি বুধবার তাঁকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে জেলে ফেরানোর সময়ে আচমকা পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন সাজ্জাক। দু’জন পুলিশকর্মীকে জখম করে আদালত চত্বর থেকেই পালিয়ে যায় বিচারাধীন বন্দি। ১৮ জানুয়ারি শনিবার ভোরে চোপড়ার বাংলাদেশ সীমান্তে পুলিশের এনকাউন্টারে সাজ্জাকের মৃত্যু হয়। নিহত যুবক করণদিঘি থানার ছোটসোহার গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশের অভিযোগ ছিল, ’সাজ্জাক বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, তাঁকে আটকাতে গিয়েই পুলিশ গুলি চালায়’। রাজ্য পুলিশের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে জানানো হয়, গোপন সূত্রে তারা জানতে পেরেছিল, অভিযুক্তকে চোপড়া সীমান্ত থেকে ধরা হয়। কিন্তু পুলিশকে লক্ষ্য করে সেখানেও গুলি ছোড়েন সাজ্জাক। তারপরেই পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। সংঘর্ষে মৃত্যু হয় অভিযুক্তের।
এনকাউন্টারে বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাকের গায়ে তিনটি গুলি লেগেছিল। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসকদের মতে, অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর বাঁ কাঁধে, পিঠে এবং পায়ে গুলি লেগেছিল। গত শনিবার সকাল ৮ টা ৫ মিনিট নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের এই ‘এনকাউন্টার’ নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী তাপস ভঞ্জ।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত সূর ‘সংবাদ হেডলাইন’কে বললেন, “কদিন আগে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার বলেছিলেন, কেউ পুলিশের উপর একটি গুলি চালালে তারা চারটি গুলি চালাবে। ডিজির এই মন্তব্য আপত্তিকর, বেআইনি এবং অসাংবিধানিক। একজন পুলিশ প্রধান এধরনের মন্তব্য করতে পারেন না। ডিজির এই মন্তব্যের প্রকাশ্যে নিন্দা করা উচিত ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু তিনি তা করেননি।” সূরের দাবি, “১৮ জানুয়ারির গোটা ঘটনাকে সাজিয়ে ফেক এনকাউন্টার করা হয়েছে। পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।”